বিগত ১৬ বছরে দেশে মাফিয়াতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “ফ্যাসিবাদী সরকার দেশের মানুষের বুকে গুলি চালিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চেয়েছিল। কোটা পদ্ধতি ছিল দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির হাতিয়ার।”
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সকালে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে ঢাকা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব মন্তব্য করেন তিনি।
বক্তব্যে ড. ইউনূস বলেন, “২০২৪ সালের উত্তাল জুলাই ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসের এক সংকটময় অধ্যায়। ১৬ বছরের পুঞ্জীভূত ক্ষোভ ও বৈষম্যের প্রতিবাদে তরুণ প্রজন্ম রাজপথে নেমেছিল। যারা ভালো ফলাফল করেও ঘুষ না দিতে পারায়, মাফিয়াদের সঙ্গে সখ্য গড়তে না পারায় চাকরি পায়নি।
তিনি অভিযোগ করেন, “আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ আহতদের চিকিৎসা পর্যন্ত নিতে দেওয়া হয়নি। হাসপাতালগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল যাতে তাদের সেবা না দেওয়া হয়।
ড. ইউনূস আরও জানান, শহীদদের পরিবার এবং আহতদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে, গুরুতর আহতদের বিদেশে চিকিৎসার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “৫ আগস্ট শুধুই একটি স্মরণ দিবস নয়, এটি গণজাগরণের প্রতীক, ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে জাতির পুনর্জন্মের দিন। আমি গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করছি ১৯৭১ সালের মুক্তিযোদ্ধাদের, যাদের আত্মত্যাগে আমরা পেয়েছি স্বাধীন বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, “স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দি পেরিয়ে গেলেও এদেশের মানুষ এখনো সুবিচার ও গণতন্ত্র থেকে বঞ্চিত। একটি বৈষম্যহীন, মানবিক ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার এখনই সময়।
সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতির কড়া সমালোচনা করে ড. ইউনূস বলেন, “এটি ছিল দুর্নীতি ও তদবির বাণিজ্যের বৈধ রূপ। যারা ক্ষমতাসীনদের সমর্থন করত বা আর্থিক সুবিধা দিতে পারত, চাকরি তাদের জন্য বরাদ্দ থাকত। যিনি এসব দিতে পারতেন না, তার ভাগ্যে ছিল বেকারত্ব।
বক্তব্যের শেষাংশে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “এখন সময় এসেছে একটি ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনের। যেখানে চাকরি, শিক্ষা, চিকিৎসা ও নিরাপত্তা থাকবে সমানভাবে সবার জন্য। তরুণরা যেন আর কোনো বৈষম্যের শিকার না হয়, সেটিই আমাদের লক্ষ্য।