হবিগঞ্জ প্রতিনিধি: হবিগঞ্জ সদর উপজেলায় ভুয়া শিক্ষাগত সনদ ব্যবহার করে সরকারি চাকরি করার অভিযোগ উঠেছে আনসার ও ভিডিপির উপজেলা মহিলা কোম্পানি কমান্ডার শেফা আক্তারের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি স্বজনপ্রীতি, নিয়োগে অনিয়ম এবং সদস্যদের ডিউটি ও ভাতা আত্মসাতের মতো গুরুতর অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
জানা যায়, হবিগজ্ঞ সদর উপজেলার পইল পশ্চিম পাড়া গ্রামের আব্দুল খালেকের মেয়ে দক্ষিন তেঘরিয়ার বাসিন্ধা শেফা আক্তার ২০১৮ সালে হবিগজ্ঞ সদর উপজেলা মহিলা আনসার কোম্পানি কমান্ডার হিসেবে আনসার বাহিনীতে যোগ দেন। নিয়োগের সময় জমা দেওয়া সনদ অনুযায়ী তিনি ১৯৯৭ সালে সুকড়ি পাড়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে অষ্টম শ্রেণি পাস করেছেন বলে দাবি করেন।
সরেজমিনে সাংবাদিকরা অনুসন্ধানে গেলে সুকড়ি পাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাহাউদ্দিন চৌধুরী বিদ্যালয়ের রেজিষ্টার খাতাপত্র যাছাই-বাছাই করে সাংবাদিকদের জানান, বিগত ১৯৯৭ সালে ও ওই বছরের আগেপরে শেফা আক্তার নামে কোনো শিক্ষার্থীর নাম বিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারে পাওয়া যায়নি। এমনকি ঐ বিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট ফরমের সাথে শেফা আক্তারের ভুয়া বানানো শিক্ষা সনদের কোন মিলও নাই। এছাড়া এতে প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষরও জ্বাল। ফলে তার শিক্ষাগত সনদের বৈধতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে।
অভিযোগ রয়েছে, তৎকালীন এক উপজেলা আনসার কর্মকর্তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলে এবং তৎকালিন ফ্যাসিষ্ট সরকারের একটি রাজনৈতিক প্রভাবশালী মহলের সহায়তায় সে এই পদে নিয়োগ পায়। বিগত সাত বছর ধরে সে সরকারি ভাতা ও অন্যান্য সরকারী সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করে আসছে। এছাড়া তৎকালীন এক জেলা কমান্ড্যান্টের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে । এ কারণে এক পর্যায়ে তাকে আনসার ভিডিপি অফিসে যাওয়া নিষেধ করা হয়। তবে পরবর্তীতে বিশেষ সুপারিশের মাধ্যমে আবারও সে সেখানে নিয়মিত যাতায়াত শুরু করে।
শেফা আক্তারের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, সে নিয়মনীতি উপেক্ষা করে টাকার বিনিময়ে জাতীয় নির্বাচনসহ বিভিন্ন নির্বাচন ও সারদীয় দূর্গা পুজায় লোক নিয়োগ দিয়েছে। এতে যোগ্য প্রার্থীরা বঞ্চিত হয়েছেন। ফল বাহিনীর সদস্যদের ভেতরে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। আনসার ও ভিডিপির সদস্যগন অভিযোগ করেছেন, তিনি সদস্যদের প্রাপ্য ডিউটি ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা নিয়মিত আত্মসাৎ করে আসছেন। ক্ষুব্ধ আনসার-ভিডিপির সদস্যগনসহ জেলার সচেতন মহল এ বিষয়ে জরুরী ভিত্তিতে তদন্তপূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হবিগঞ্জ জেলা আনসার ও ভিডিপি কমান্ড্যান্ট হোসনে আরা হাসি সাংবাদিকদের বলেন, শেফা আক্তারের জাল সনদে চাকরি নেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। তিনি এব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন।