অন্যান্য বছরের তুলনায় আগামী বছর (২০২৬) হজের খরচ কমানোর পরিকল্পনা করছে সরকার। ধর্ম মন্ত্রণালয় আগামী আগস্ট মাসের শুরুতেই ২০২৬ সালের হজ প্যাকেজ ঘোষণা করবে। তবে, সৌদি আরব সরকারের নতুন রোডম্যাপ অনুযায়ী, হজের কার্যক্রম আগেভাগেই সম্পন্ন করার যে চাপ রয়েছে, তা বাংলাদেশের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা বর্তমানে সৌদি আরবের হজের খরচ এবং দেশের অভ্যন্তরীণ বিমান ভাড়া নির্ধারণের অপেক্ষায় রয়েছেন। এ বছর (২০২৫) সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্যাকেজ-১ এর মাধ্যমে হজে খরচ হয়েছিল ৪ লাখ ৭৮ হাজার ২৪২ টাকা এবং প্যাকেজ-২ এর মাধ্যমে ৫ লাখ ৭৫ হাজার ৬৮০ টাকা। বেসরকারিভাবে হজ পালনের সর্বনিম্ন খরচ নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪ লাখ ৮৩ হাজার ১৫৬ টাকা। এর ভিত্তিতে হজ এজেন্সিগুলো তাদের প্যাকেজ নির্ধারণ করেছে।
নিবন্ধন ও অর্থ প্রেরণের সময়সূচি:
জানা গেছে, নুসুক মাসার প্ল্যাটফর্মে সৌদি সরকার আগামী হজের কোটা জানিয়ে দিয়েছে। গত কয়েক বছরের মতো আগামী বছরও বাংলাদেশ থেকে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনা মিলিয়ে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ পালন করতে পারবেন। যদিও গত দুটি হজে বাংলাদেশ কোটা পূরণ করতে পারেনি।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী, চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী বছরের মে মাসের শেষ সপ্তাহে সৌদি আরবে পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। গত বছর ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত হজযাত্রী নিবন্ধন চললেও, নতুন রোডম্যাপ অনুযায়ী এবার ১২ অক্টোবরের মধ্যে প্যাকেজের পুরো টাকা নিয়ে হজের নিবন্ধন শেষ করতে হবে। এছাড়া, সেবা প্যাকেজের প্রয়োজনীয় অর্থ ২১ ডিসেম্বরের মধ্যে সৌদি আরবে পাঠাতে হবে।
আগামী বছরের ৪ জানুয়ারি নুসুক মাসার প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সার্ভিস কোম্পানির সঙ্গে সেবা গ্রহণের চূড়ান্ত চুক্তি সম্পন্ন করতে হবে। একই সঙ্গে মক্কা ও মদিনায় হজযাত্রীদের বাড়ি বা হোটেল এবং পরিবহন চুক্তির জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ স্থানান্তর ২০ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে। বাংলাদেশ সরকার ও সৌদি সরকারের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক হজচুক্তি সই হবে ৯ নভেম্বর। সৌদি আরব স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, রোডম্যাপের নির্ধারিত সময়সূচির মধ্যে কোনো কাজ সম্পন্ন না হলে হজ পালন অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব এ কে এম আফতাব হোসেন প্রামাণিক সমকালকে বলেন, “আমরা চাই হজের খরচ কম হোক, যাতে বেশি সংখ্যক মানুষ হজে যাওয়ার সুযোগ পায়। ওই প্রান্তের ও আমাদের প্রান্তের খরচ যদি কমাতে পারি তাহলে খরচ কমবে।” তিনি আরও জানান, এই রোডম্যাপ নিয়ে তারা হজ এজেন্সিগুলোর সংগঠন ‘হাব’-এর সঙ্গে আলোচনা করেছেন।