কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও আমেরিকায় উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন দেখিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কের মালিক মো. খায়রুল বাশার বাহারকে ১০ দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (৩০ জুলাই) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জিয়াদুর রহমান এ আদেশ দেন। এদিন রিমান্ড শেষে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খায়রুল বাশারকে আদালতে হাজির করে কারাগারে রাখার আবেদন করলে, বিচারক তা মঞ্জুর করেন।
এর আগে, ১৪ জুলাই দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডি থানার ৪ নম্বর রোডের একটি বহুতল ভবনের নিচতলা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন ১৫ জুলাই ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. ছানাউল্ল্যাহ ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, খায়রুল বাশার ও তাঁর প্রতিষ্ঠান বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্ক শিক্ষার্থী ভিসা এবং উচ্চশিক্ষার সুযোগ দেওয়ার প্রলোভনে চটকদার বিজ্ঞাপন দিতো। এই বিজ্ঞাপন দেখে উচ্চশিক্ষার জন্য আবেদনকারী অন্তত ১৪১ জন ভুক্তভোগী প্রতিষ্ঠানটির কাছে যান। সেখান থেকে তাঁদের কাছ থেকে মোট ১৮ কোটি ২৯ লাখ ৫৭ হাজার ৬৮০ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়।
তবে মামলার তদন্তে উঠে এসেছে, শুধু ১৪১ জন নয়, প্রতিষ্ঠানটি দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ৪৪৮ জনেরও বেশি ভুক্তভোগীর কাছ থেকে প্রায় ৫৩ কোটি টাকারও বেশি অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে এই তথ্য মিললেও, চূড়ান্ত তদন্ত শেষে এই পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
তদন্ত কর্মকর্তারা জানান, খায়রুল বাশার একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। চক্রটি শুধু দেশেই নয়, বিদেশেও মানি লন্ডারিংয়ের সঙ্গে জড়িত রয়েছে। গুলশান থানাসহ রাজধানীর বিভিন্ন থানায় তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের মামলা রয়েছে।
তদন্তকারীরা বলছেন, গ্রেপ্তারের পর তাঁর মোবাইল ফোন, কম্পিউটার ও ব্যাংক হিসাব থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে আরও অনেক ভুক্তভোগীর তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। এর মধ্যে বহু শিক্ষার্থী সব হারিয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
আদালতের আদেশে বর্তমানে খায়রুল বাশার কারাগারে থাকলেও, তদন্ত সংস্থা তাঁর বিরুদ্ধে অর্থ পাচার আইনে আরও একটি মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।