ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় মানুষের খাদ্য সংকট দিন দিন তীব্র হচ্ছে। বিপন্ন অবস্থায় থাকা সাধারণ মানুষ যখন খাবারের জন্য রাস্তায় নামছেন, তখনই ইসরায়েলি সেনাবাহিনী নির্বিচারে তাদের ওপর গুলি বর্ষণ করছে। গত দুই দিনে অন্তত ১০০ জন নিহত এবং আরও কয়েকশ মানুষ আহত হয়েছেন— জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সমন্বয় কার্যালয় (ওচা) এ তথ্য জানিয়েছে।
ওচা’র সহকারী মুখপাত্র ফারহান হক শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন খাদ্য বিতরণ কেন্দ্র এবং খাদ্য বহনকারী গাড়িবহরের পাশে এ ধরনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে কেউ যাতে জীবন ঝুঁকি নিয়ে খাবার সংগ্রহ করতে না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।” তিনি আরো বলেন, “স্থানীয় পর্যায়ে মানবিক সহায়তা পৌঁছানো যেন বাধাগ্রস্ত না হয় এবং সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা সুরক্ষিত থাকে—এ ব্যাপারে আমরা সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”
জাতিসংঘ জানায়, গাজায় টানা কয়েক মাস ধরে ন্যূনতম জীবনধারণের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মারাত্মক ঘাটতি দেখা দিয়েছে। খাদ্য, পানি, ওষুধসহ নানান মানবিক সহায়তা পৌঁছানো যাচ্ছে না নিরাপদ ও অবাধে। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণাধীন রুটগুলোতে চলাচলে অসুবিধা ও ঝুঁকি রয়েছে, ফলে মানবিক কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
২০১৪ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে গাজায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযান অব্যাহত রয়েছে। জাতিসংঘের তথ্যমতে, এ পর্যন্ত ৬০ হাজার ৩০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশ নারী ও শিশু। ধারাবাহিক বোমাবর্ষণ ও অবরোধের ফলে গাজা অঞ্চল ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের শিকার হয়েছে এবং সেখানে একটি ভয়াবহ মানবিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে।
এই সংকট মোকাবিলায় দ্রুত ও নিরাপদ সহায়তা পৌঁছানো প্রয়োজন, তা না হলে গাজার সাধারণ মানুষের দুর্দশা আরো প্রকট হবে—জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বারবার এ সতর্কতা দেওয়া হচ্ছে।