রাজধানীর বসুন্ধরায় কনভেনশন সেন্টারে গোপন বৈঠকে তৃণমূল আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণের অভিযোগে ২২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যমতে, এসব বৈঠকের মূল পরিকল্পনায় ছিলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেজর সাদিকুল হক সাদিক। ইতোমধ্যে আইএসপিআরের এক বিজ্ঞপ্তিতে তাঁর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার প্রাথমিক প্রমাণের কথা জানানো হয়েছে।
আইএসপিআর জানায়, ১৭ জুলাই রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে ওই সেনা কর্মকর্তাকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। গঠিত তদন্ত আদালতের প্রাথমিক প্রতিবেদনে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। পরবর্তী তদন্ত শেষে সেনাবাহিনীর প্রচলিত আইন অনুযায়ী তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বসুন্ধরার বৈঠকে নাশকতার ছক
৮ জুলাই বসুন্ধরার কে বি কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত বৈঠককে ঘিরে পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে নাশকতার আশঙ্কাজনক তথ্য। মামলার এজাহারে বলা হয়, সেদিনের বৈঠকে ৩০০–৪০০ জন অংশ নেন। সেখানে শেখ হাসিনার দেশে প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে ঢাকা দখল, শাহবাগ মোড় অবরোধ ও আতঙ্ক সৃষ্টির পরিকল্পনা হয়।
বৈঠকটি আয়োজন করেন শামীমা নাসরিন শম্পা নামে এক আওয়ামী লীগ নেত্রী, যিনি বিদেশে লোক পাঠানোর ট্রাভেল এজেন্সির আড়ালে স্থানটি ভাড়া নেন। বৈঠকের দিন সকাল ১০টার পর সিসি ক্যামেরা বন্ধ করে দেন কনভেনশন সেন্টারের ব্যবস্থাপক মুজাহিদ, যিনি বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন।
ডিএমপি: “ঘটনার পেছনে বড় কিছু থাকতে পারে”
ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ‘এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে লোকজন নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। আমরা বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছি।’
তিনি আরও জানান, এই ঘটনার পেছনে অন্য কোনো শক্তি, প্ররোচনা বা পরিকল্পনা রয়েছে কি না—তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে এখনো কোনো আশঙ্কা নেই বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
সেনাবাহিনীর অবস্থান: ‘অরাজনৈতিক ও শৃঙ্খলাবদ্ধ’
আইএসপিআরের বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট করে বলা হয়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী একটি অরাজনৈতিক, শৃঙ্খলাবদ্ধ ও পেশাদার প্রতিষ্ঠান। রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হলে সেনা আইনে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আপডেট থাকুন | তদন্তের অগ্রগতি জানতে নিয়মিত চোখ রাখুন [বিশেষ সংবাদ] অনলাইনে।