৩৯ বছর বয়সেও থেমে নেই ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি মার্তা। অতিরিক্ত সময়ে নেমে জোড়া গোল, এরপর টাইব্রেকারে নিশ্চিত করেন ইতিহাস। লাতিন আমেরিকার নারী ফুটবলের সর্ববৃহৎ আসর কোপা আমেরিকা ফেমিনিনার নাটকীয় ফাইনালে কলম্বিয়াকে হারিয়ে নবমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হলো ব্রাজিল নারী দল।
শনিবার ইকুয়েডরের রদ্রিগো পাজ ডেলগাদো স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় শ্বাসরুদ্ধকর এই ফাইনাল। ম্যাচজুড়ে রোমাঞ্চ, উত্থান-পতন আর নাটকীয়তায় ভরপুর খেলায় তিনবার পিছিয়ে পড়েও ঘুরে দাঁড়ায় ব্রাজিল। নির্ধারিত সময়ে স্কোরলাইন ৩-৩, অতিরিক্ত সময় শেষে ৪-৪, শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে ৫-৪ ব্যবধানে জয় নিশ্চিত করে তারা।
৮২তম মিনিটে বদলি নেমেই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন মার্তা। ষষ্ঠ মিনিটের ইনজুরি টাইমে গোল করে সমতা ফেরান (৩-৩)। অতিরিক্ত সময়ের শুরুতেই দ্বিতীয় গোলটি করে দলকে ৪-৩ ব্যবধানে এগিয়ে দেন তিনি। যদিও কলম্বিয়ার লেইসি সান্তোস ১১৫তম মিনিটে গোল করে ম্যাচে ফেরান দলকে।
টাইব্রেকারে ব্রাজিলের গোলরক্ষক লোরেনা দা সিলভা হয়ে ওঠেন নায়িকা। তিনি দুটি পেনাল্টি ঠেকিয়ে ব্রাজিলকে এনে দেন টানা পঞ্চম ও মোট নবম শিরোপা।
মার্তা এর আগে ছয়টি বিশ্বকাপ ও ছয়টি অলিম্পিকে খেলেছেন। তার আন্তর্জাতিক গোলসংখ্যা এখন ১২২, ম্যাচ ২০৬টি। এই ম্যাচে তার অভিজ্ঞতা, নেতৃত্ব ও দৃঢ়তা ফাইনালে পার্থক্য গড়ে দেয়।
ব্রাজিলের পক্ষে গোল করেন অ্যাঞ্জেলিনা আলোনসো (৪৫তম মিনিট) ও আমান্ডা গুতিয়েরেস (৮০তম মিনিট)। অলিম্পিকে রুপাজয়ী গুতিয়েরেস ছয় গোল করে এই টুর্নামেন্টের যৌথ শীর্ষ গোলদাতা হয়েছেন প্যারাগুয়ের ক্লাউডিয়া মার্টিনেজের সঙ্গে।
কলম্বিয়ার হয়ে গোল করেন লিন্ডা কাইসেদো (২৫তম মিনিট), মায়রা রামিরেজ (৮৮তম মিনিট) এবং লেইসি সান্তোস (১১৫তম মিনিট)। এছাড়া ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার তার্সিয়ানে আত্মঘাতী গোল করেন (৬৯তম মিনিট), যা কলম্বিয়াকে তৃতীয়বারের মতো লিড এনে দেয়।
এই জয় ব্রাজিল নারী দলের লাতিন অঞ্চলে আধিপত্য আরও মজবুত করল। কোপা আমেরিকার ৯টি আসরের মধ্যে ৮টিই এখন তাদের দখলে। বিশ্বকাপে ২০০৭ সালের রানার্স-আপ হওয়াই তাদের সেরা সাফল্য, অলিম্পিকেও তিনবার উঠেছে ফাইনালে।
উল্লেখ্য, এটি ছিল ২০২২ সালের ফাইনালের পুনরাবৃত্তি, যেখানে ব্রাজিল কলম্বিয়াকে ১-০ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। তবে এবারকার নাটকীয়তা, রোমাঞ্চ আর মার্তার কিংবদন্তিসুলভ প্রত্যাবর্তন ম্যাচটিকে করে তুলেছে স্মরণীয় এক মহারণ।